ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁয়ে মঙ্গলবার ভয়াবহ হামলার রেশ ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর এমন উত্তেজনাকর অবস্থা গোটা অঞ্চলকেই সংকটে ফেলতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও। প্রভাব এড়াতে ঢাকাকে এখনই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।তারা বলছেন, পুরো পরিস্থিতির ওপর আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি হলে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে-আঞ্চলিক নিরাপত্তা, রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি, সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ ইস্যু।
তারা আরও বলছেন, সামরিক ও ও ক‚টনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে কৌশলী হতে হবে। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যে কোনো বক্তব্য বুঝে-শুনে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও সাইবার যুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য এড়াতে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মুনরিুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বর্তমানে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে দুটি দেশের মধ্যে বর্তমানে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তাদের মধ্যে সংঘাতের ইতিহাস আছে। তারা দুটি বৃহৎ সামরিক শক্তি এবং পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। কাজেই পুরো পরিস্থিতির ওপর আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ খুব দ্রুত অনেক কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের দেখতে হবে যে কি কি ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে হবে। তবে আমাদের প্রত্যাশা এই অঞ্চলে যেন কোনোভাবেই শান্তি বিঘ্নিত না হয়।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, এখনো পর্যন্ত যে পর্যায়ে আছে, তাতে করে ‘এ কাইন্ড অব পক্সি ওয়ার’র দিকেই সম্ভবত যাচ্ছে। দুটো দেশের পক্সি ওয়ারের মধ্যে আমরা যেন অযথা জড়িয়ে না পড়ি।
তিনি আরও বলেন, যখন বিবৃতি বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে অভ্যন্তরীণভাবে বা কোনো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তখন এই কথাটা মনে রাখতে হবে-আমরা ন্যায়ের পথে, সত্যের পথে।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এমনিতেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট বিদ্যমান। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যেকার উত্তেজনা এই সংকটকে আরও প্রভাবিত করতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমাদের যে গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তাদের এই বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। ভারতের প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নজর রাখা দরকার বলেও মনে করেন তারা।
Leave a Reply